Overview
Medically reviewed by Mr Dr Mazid
পরিচিতিঃ
ঘাড় ব্যথা আমাদের সমাজের মানুষের একটি প্রধান সমস্যা । প্রতি তিনজন মানুষের মধ্যে দুজন ঘাড় ব্যথায় ভুগে থাকেন ।
কারণ:
- ঘাড় ব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ পশ্চার। পশ্চার হচ্ছে আমরা যে কোন কাজ করার সময় শরীরের বিভিন্ন অংশের অবস্থা বা অবস্থান । যেভাবে আমরা ঘাড়ের মাংসপেশিকে রেখে কাজ করি বা মুভমেন্ট করি সেটাকে পশ্চার বলে। এই পশ্চার সঠিকভাবে না থাকলে আমাদের ঘাড় ব্যথা হতে পারে।
- ঘাড় সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে ঘাড়ের মাংস পেশি শক্ত ও স্পাজম হয়ে যায় , ঘাড়ের মোবিলিটি কমে যায় , জয়েন্ট সঠিকভাবে কাজ করে না। ফলে ঘাড়ে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভূত হয়।
- বেশি পরিশ্রম ও দুর্বলতা থেকেও ব্যথা হতে পারে।
- সামনে ঝুঁকে বেশি ওজন বহন করলে ঘাড়ে ব্যথা হয়।
- দীর্ঘ সময় কম্পিউটারে কাজ করলে ঘাড়ে ব্যথা হয়।
- ঘুমানোর সময় উঁচু বা শক্ত বালিশে ঘুমালে বা অস্বাভাবিক পশ্চারে ঘুমালে ঘাড়ে ব্যথা হয়।
- টনসিল ইনফেকশনের কারণেও ঘাড়ে ব্যথা হয়ে থাকে।
- থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য ঠিক না থাকলে ঘাড়ে ব্যথা হয়।
- অস্টিওপোরোসিস
- ঘাড়ের ইনফেকশন থাকলে।
- মেরুদন্ডের টি.বি থেকে ঘাড় ব্যথা হতে পারে।
- মেরুদন্ড ,হাড় ও স্নায়ুর টিউমার থাকলে।
- সারভার্ইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস
- সারভার্ইক্যাল ডিস্ক প্রলেপস
- সারভার্ইক্যাল অস্টিও আথ্রাইটিস
উপসর্গ:
- ঘাড়ের মাংসপেশি জমে থাকে এবং ঘাড়ে ব্যথা হবে।
- ঘাড়ের মুভমেন্টে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
- ঘাড় নিচু করে কাজ করলে বা ওজন বহন করলে ব্যথা তীব্র হতে পারে।
- রাতে ব্যথা বাড়তে পারে এবং ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
- সামনে ঝুঁকে কাজ করলে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।
- ঘাড়ের ব্যথা পর্যায় ক্রমে কাজ বাহু , হাত ও আঙ্গুলে হতে পারে।
- ঘাড় ,কাঁধ ,বাহু ও আঙ্গুলে অবশ ভাব হতে পারে। ঝিনঝিন করতে পারে।
- ভারি কোন কিছু বহন করলে কাঁধ ও হাতে ব্যথা হতে পারে। দুর্বল লাগতে পারে।
চিকিৎসা:
ব্যথা সাধারণত দুই প্রকার
• স্বল্পমেয়াদী ব্যথা
• দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা
ব্যাথার উপসর্গের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন প্রকারে চিকিৎসা দেওয়া হয়। স্বল্পমেয়াদী ঘাড় ব্যথা মূলত 1-2 সপ্তাহের মধ্যেই সেরে যায়। দীর্ঘস্থায়ী ঘাড় ব্যথা নিরাময়ে ব্যায়াম ,ইয়োগা, দৈনন্দিন জীবনযাপনে পরিবর্তন এনে একাধিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। সকল চিকিৎসা ব্যর্থ হলেই সার্জারির বিষয়ে ভাবতে পারেন।
• ঘাড়ে গরম বা ঠাণ্ডা সেক্ নিতে পারেন।
• চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথা নিরাময়ের ওষুধ সেবন করতে পারেন। তবে সেটা দীর্ঘমেয়াদি নেয়া যাবেনা।
• ঘাড় ব্যথায় গলায় কলার ব্যবহার করতে পারেন।
• নিয়মিত শরীর চর্চা করতে পারেন।
ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাঃ
ঘাড় ব্যথা নিরাময়ে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার কোনো বিকল্প নেই।
• ট্রাকশন
• স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ
• স্ট্রেনথেনিং
• মেনিপুলেশন
• মাংসপেশি রিলাক্স করা
• মুভমেন্টের সাথে মোবিলাইজেশন
প্রতিরোধের উপায়ঃ
• সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষন কাজ করবেন না। কাজের মাঝে কিছু সময় বিশ্রাম নিন।
• যারা কম্পিউটারে কাজ করেন তাদের কম্পিউটারের মনিটর চোখের লেভেল অনুযায়ী রাখুন যেন খুব বেশি ঝুঁকতে না হয়।
• শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন। নরম ও নিচু ঘাড়ে সাপোর্টিক হয় এমন।
• যাদের সারভাইকেল স্পাইনের ডিস্ক স্পেস কমে যাওয়ার কারণে ঘাড় ব্যথায় ভুগছেন তারা ভ্রমণের সময় সারভাইকেল কলার ব্যবহার করুন।
• ঘাড়ের মাংসপেশির শক্তি ঠিক রাখার জন্য ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করুন।